শিক্ষা কার্যক্রম

‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে রাজশাহী, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, মেহেরপুর, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদরাসা পরিচালিত হচ্ছে। এ সকল মাদরাসায় অধ্যয়ন করছে ২০০০-এর অধিক ছাত্র-ছাত্রী। লালিত-পালিত হচ্ছে আরো প্রায় পাঁচ’শ ইয়াতীম ও ইয়াতীমা। এ সকল ছাত্র-ছাত্রীকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে ইসলামের বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলসম্পন্ন এবং যুগোপযোগী শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হচ্ছে। বর্তমানে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য কিছু স্থানে অনুরূপ মারকায প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ পরিকল্পনাধীন রয়েছে। এছাড়া স্বতন্ত্র সিলেবাস ও বইসমূহ প্রণয়নের জন্য ‘দারুল হাদীছ শিক্ষাবোর্ড’ নামে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ

আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।

al-markajul islami as-salafi, rajshahi

‘আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী’ দেশের অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এক ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ পরিচালিত এই মাদরাসাটি ১৪০১ হিজরী মোতাবেক ১৯৯১ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই অত্র প্রতিষ্ঠানটি যথার্থভাবে কুরআন, হাদীছ, আরবী ভাষা ও সাহিত্য, ইসলামী ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষাদানে গুরুত্বারোপ করে আসছে। ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির আলোকে আগামী প্রজন্মকে আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলাই এর প্রধান লক্ষ্য। সাথে সাথে ইলমে দ্বীনের যথাযথ অনুশীলনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ আক্বীদার প্রসার ঘটানো এবং ইসলামের নামে প্রচলিত ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমলের সংস্কার সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নৈতিক আদর্শ একটি জাতির সভ্যতার প্রধান মাপকাঠি। উন্নত আদর্শ ব্যতীত কোন জাতিই নৈতিকতার সর্বোচ্চ মান অর্জন করতে পারে না এবং স্বীয় অস্তিত্বও টিকিয়ে রাখতে পারে না। অথচ শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের এই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধর্মনিরপেক্ষ ও বস্তুবাদী ধারায় পরিচালিত হচ্ছে এবং ইসলামী আদর্শ ও নৈতিকতার দিকটি চরমভাবে উপেক্ষিত রয়েছে। যা স্বভাবতঃই শিক্ষার্থীদের কোমল মনে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। এমতপ্রেক্ষিতে সীমিত সামর্থ্যের মাঝেও ‘আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী’ এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করছে, যা বৃটিশ প্রবর্তিত প্রচলিত মাদরাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার দ্বি-মুখী ধারাকে সমন্বিত করে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ্ ভিত্তিক একক ও পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পথ প্রদর্শন করে। ধনী-গরীবের বৈষম্যহীন সহজলভ্য শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা এবং ছেলে ও মেয়েদের পৃথক শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে উভয়ের জন্য উচ্চ শিক্ষা ও পৃথক কর্মক্ষেত্র ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা অত্র শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম উদ্দেশ্য। শুধুমাত্র পরীক্ষায় ভাল ফলাফল অর্জন নয়; বরং চূড়ান্ত অর্থে পরবর্তী প্রজন্মকে দ্বীনী চরিত্রবান ও জ্ঞানসম্পন্ন সচেতন নাগরিক এবং বিশুদ্ধ আক্বীদাসম্পন্ন আদর্শ মুসলিম হিসাবে গড়ে তোলাই প্রতিষ্ঠানটির একান্ত লক্ষ্য। বর্তমানে ১০০ ইয়াতীমসহ আবাসিক-অনাবাসিক প্রায় সাড়ে ছয়শতাধিক ছাত্র এখানে পড়াশোনা করছে।

মাদরাসাতুল বানাত আস-সালাফিয়াহ, নওদাপাড়া, রাজশাহী (মহিলা মাদরাসা) :

‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগের অধীনে পরিচালিত দেশের প্রথম এই মহিলা মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে ২০০৪ সালে। ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ মহিলা সংস্থা’র কয়েকজন উৎসাহী সদস্যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এর প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী ভিত্তিতে নির্মিত মাদরাসা ভবনে ও ভাড়াকৃত বাড়িতে প্রায় ৭ বছর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। অতঃপর ২০১২ সালের ১৪ই জানুয়ারী এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বর্তমান ক্যাম্পাসে উক্ত মাদরাসাটি স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হয়েছে। ২০০৬ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থাপনাও সংযুক্ত করা হয়। বর্তমান ক্যাম্পাসে নবনির্মিত সুপরিসর আবাসিক ভবনে আপাতত ১৩৫ জন ছাত্রীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ২৫ জন ইয়াতীমাসহ বর্তমানে প্রায় ৩০০ ছাত্রী এখানে অধ্যয়নরত। দশ বিঘা আয়তন বিশিষ্ট অত্র ক্যাম্পাসে আগামীতে দুস্থ মহিলাদের জন্য কারিগরী প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ একটি পূর্ণাঙ্গ মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

দারুল হাদীছ আহমাদিয়া সালাফিয়া, বাকাল, সাতক্ষীরা।

darul hadeeth ahmadia salafiya bakal satkhira

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যেলা সাতক্ষীরার শহরতলী থেকে ২ কি.মি. পশ্চিমে সাতক্ষীরা-কালিগঞ্জ মহাসড়ক সংলগ্ন এক মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পরিবেশে অবস্থিত এই মারকায। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এ মারকাযটি ছিল জনশূন্য দিগন্ত বি¯তৃত চিংড়ির ঘেরের মধ্যে একটি ছোট্ট দ্বীপের মত। সময়ের ব্যবধানে এটি এখন ব্যাস্ততম এলাকায় পরিণত হয়েছে।
১৯৯২ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৯৪ সালে চালু হয় ইয়াতীম বিভাগ। বর্তমানে সেখানে ১৭৫ জন ইয়াতীমসহ প্রায় ৩৫০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। বর্তমানে এখানে মোট ২৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে।

আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, কালদিয়া, বাগেরহাট।

Al-markajul islami bagerhut

১৯৯৯ সাল বাগেরহাট জেলায় প্রতিষ্ঠিত এই দুই একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই মারকাযে বর্তমানে ৭৫ জন ইয়াতীম সহ শতাধিক ছাত্র অধ্যয়ন করছে। শিক্ষক-কর্মচারী সংখ্যা ৮ জন।

দারুল হাদীছ শিক্ষাবোর্ডের অধিভূক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ :

  1. মাদরাসাতুল হাদীছ আস সালাফিয়া, সাপগ্রাম, বগুড়া।
  2. মেন্দিপুর-চাকলা সালাফিয়া হাফেযিয়া মাদরাসা, মেন্দীপুর, বগুড়া।
  3. বৃ-কুষ্টিয়া দারুল হাদীছ সালাফিয়া তাহফীযুল কুরআন মাদরাসা, শাহজাহানপুর, বগুড়া।
  4. সাহারবাটি এম এস দাখিল মাদরাসা ও ইয়াতীমখানা, গাংনী, মেহেরপুর।
  5. মাদরাসাতুল হাদীছ, পূর্বাচল, ঢাকা।


নোটিশ বোর্ড
তাবলীগী ইজতেমা ২০১৩
২৮ ফেব্রুয়ারী ও ১ মার্চ
স্থান : নওদাপাড়া, রাজশাহী।